Header Ads

সম্পন্ন হল বারো দিনের উত্তর-পূর্ব গ্রন্থমেলা

দেবযানী পাটিকর, গুয়াহাটিঃ  বারো দিন ব্যাপী বইমেলা শেষ হল মঙ্গলবার। সারা অসম পুঁথি প্রকাশক ও বিক্রেতা সংস্থার উদ্যোগে গত ৯ নভেম্বর থেকে গুয়াহাটি ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় ২০তম উত্তরপূর্ব গ্রন্থমেলা। বইমেলায় এবার বইয়ের বিক্রি গত কয়েক বছর থেকে অনেক বেশি হয়েছে। প্রায় চার কোটি  বই বিক্রি হয়েছে জানালেন মেলার উদ্যোক্তারা।
 নুতন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের এবারে গ্রন্থমেলাতে প্রচুর বই কিনতে দেখা গেছে।  যদিও "ই বই" এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের দৌলতে নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহটা অনেকটাই কমে গেছে। কারণ সময় কম দেখে অনেকেই "ই বই"পড়তে পছন্দ করে। কিন্তু এবারের বইমেলাতে দেখা গেল অনেক ছেলে মেয়েই বন্ধু বান্ধব বা বাবা-মা'র হাত ধরে বই কিনতে বইমেলায় এসে হাজির হয়েছে। এ প্রসঙ্গে গৌহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর কথায় যদিও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর দৌলতে বই এখন  হাতের মুঠোয় চলে আসে। কিন্তু ছাপা বই পড়ার আনন্দটাই আলাদা। "ই "মাধ্যমের আকর্ষণ ছাপা বইয়ের মূল্য কমায়নি। নিজের পছন্দের বই কিনতে স্কুল কলেজে অনেক ছাত্রছাত্রী ভিড় জমিয়েছে বইমেলাতে। তাদের মতে যারা বই ভালোবাসে বইমেলা তাদের আকর্ষণ করে। কারণ বই জ্ঞান ও বৌদ্ধিক চেতনার বিকাশে সাহায্য করে। বইমেলাতে নতুন বই, নতুন সৃষ্টি দেখা যায়। নতুন প্রজন্মের পছন্দ আলাদা। তাই লেখকরা সেই রুচির বই লেখার ও চেষ্টা করছেন।এ প্রসঙ্গে অভিভাবকদের মত ছোটবেলা থেকেই শিশুদের মধ্যে পড়ার অভ্যাসটা তৈরি করে দিলে বড় হয়ে এই অভ্যাসটা রয়ে যায়। এর ফলে ভবিষ্যতে তারা বিভিন্ন বই রুচির বই পড়তে উৎসাহ পাবে। বইমেলায় অনেক অভিভাবকই সন্তানকে নিজেদের পছন্দের বই কিনতে সাহায্য করতে দেখা গেছে। এবার ২৭৮টি বইয়ের স্টলে ছিল বিভিন্ন ধরণের বইয়ের সম্ভার। গল্প উপন্যাস, কবিতা ভ্রমণ কাহিনী, নাটক ছোটদের বই, ধার্মিক বই ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের বই  ছিল স্টলগুলিতে। এ প্রসঙ্গে কলকাতার এক প্রকাশক ও বিক্রেতা জানান-  বাংলা বইয়ের মধ্যে ছোট গল্প উপন্যাসের বই ও। ধার্মিক বই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয়েছে। তবে লোকেরা এবং ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের পছন্দের মত বই কিনেছে প্রচুর। ওদিকে, বই মেলা প্রাঙ্গণে প্রতিদিনই ছিল , আলোচনা, উন্মোচন অনুষ্ঠান, অন্তরঙ্গ আলাপ-আলোচনা, সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ,কবিতা আবৃতি, গল্প, চিত্রাঙ্কন ইত্যাদি বিভিন্ন প্রতিযোগিতা। প্রতিদিনই ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন। অসমের বিখ্যাত সংগীত  শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেছেন। অন্তরঙ্গ আলাপ আলোচনা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক, কবি, সিনেমার কলাকুশলীরা, সমাজসেবক মেলায় এসে যোগ দিয়েছেন। এবারের গ্রন্থমেলায় দেশের প্রথম সারির বহু প্রকাশন সংস্থাই যোগ দিয়েছেন। এর ভেতরে দিল্লি কলকাতা, মুম্বাই, গোহাটি, উত্তর প্রদেশের প্রকাশকরা  তাদের বইয়ের সম্ভার নিয়ে স্টলে বসেছেন। বাংলাদেশের ঢাকা থেকেও প্ৰকাশকরা স্টল দিয়েছেন। দুই লক্ষাধিক বইপ্ৰেমী মেলা প্ৰাঙ্গণে এসে ভিড় করেছেন, বই কিনেছেন, বইমেলার আনন্দ উপভোগ করেছেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.