ঈশ্বর চন্দ্র ছাড়া আর যারা বিদ্যাসাগর উপাধি পান
ঈশ্বরচন্দ্র ছাড়া আরও যারা বাংলার বিদ্বান ব্যাক্তি 'বিদ্যাসাগর' উপাধি পেয়েছিলেন.......
প্রবাদপ্রতিম যুগনায়ক ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ছাড়া অন্য যারা “বিদ্যাসাগর” উপাধি অর্জন করেছিলেন তাঁদের মধ্যে আছেন:―
১) জীবানন্দ বিদ্যাসাগর :— সেই যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ পণ্ডিত তারানাথ তর্কবাচস্পতি তাঁর পিতা। ২৬ বছর বয়সে বিদ্যাসাগর উপাধি অর্জন করেন জীবানন্দ। ২১৫টিরও বেশি সংস্কৃত গ্রন্থ সম্পাদনার কাজ করেছেন। জীবানন্দ বিদ্যাসাগর বাংলার বাইরে যাবেন না বলে লাহোর ওরিয়েন্টাল কলেজের অধ্যক্ষের পদ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন; আবার জয়পুরের মহারাজা, কাশ্মীরের মহারাজা, এবং নেপাল মহারাজের লোভনীয় সহস্র মুদ্রার চাকরিও সবিনয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
২) নীলকমল বিদ্যাসাগর :— তৎকালীন রাজশাহী জেলার রঙপুরে জন্ম। কাব্য, ব্যাকরণ, স্মৃতিশাস্ত্রে অগাধ পান্ডিত্য তাঁর ছিল। রচিত গ্রন্থ: কালার্চন চন্দ্রিকা, কৃষিতত্ত্ব, শক্তি ভক্তি, শ্রীশ্রী সরস্বতীপূজা পদ্ধতি।
৩) প্রাণকৃষ্ণ বিদ্যাসাগর :— দক্ষিণ ২৪ পরগণার হরিনাভি গ্রামে জন্ম। ভাইয়ের নাম রামনারায়ণ তর্করত্ন। প্রাণকৃষ্ণ সংস্কৃত কলেজে ব্যাকরণের অধ্যাপক ছিলেন; ‘সমাচার চন্দ্রিকা’ পত্রিকার সম্পাদক। রচিত গ্রন্থ: কূলরহস্য, শ্রীশ্রী অন্নপূর্ণা শতকম, ধর্মসভা বিলাস।
৪) রাজীবলোচন বিদ্যাসাগর :— বাংলাদেশের ফরিদপুরে জন্ম। স্মৃতি ও জ্যোতিষশাস্ত্রে পন্ডিত ছিলেন। নড়াইলের জমিদার বংশের কুলপন্ডিত হিসাবে কাজ করতেন।
৫) শশিশেখর বিদ্যাসাগর :— ফরিদপুরের কোটালিপাড়ার বাসিন্দা (আদি সংস্করণ অনুযায়ী) ১৫৯ খন্ডে অভাবনীয় মহাভারত-প্রণেতা খ্যাতনামা পন্ডিত হরিদাস সিদ্ধান্তবাগীশ মহাশয়ের পুত্র। বিভিন্ন বিদ্যালয়ে সংস্কৃত শিক্ষক ছিলেন।
৬) হরিহর বিদ্যাসাগর :— নদীয়ার নাকাশিপাড়ায় জন্ম। স্মৃতি শিক্ষা নিয়েছিলেন নিজের পিতা মধুসূদন তর্কপঞ্চাননের কাছে। ভাওয়ালের রাজা রমেন্দ্রনারায়ণের আগ্রহে ঢাকার সারস্বত সমাজের প্রধান অধ্যাপক হন। পরে আন্দুলরাজের চতুষ্পাঠীর শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন।
৭) হরানন্দ বিদ্যাসাগর :— দক্ষিণ ২৪ পরগনার মজিলপুরে জন্ম। তাঁর পুত্র শিবনাথ শাস্ত্রী স্বনামধন্য ব্যক্তি। হরানন্দ বাল্মিকী রামায়ণের অনুবাদক। জনহিতকর কাজের পাশাপাশি জজপণ্ডিতের কাজ করতেন। রচিত গ্রন্থ: নলোপাখ্যান।
কোন মন্তব্য নেই