Header Ads

নেতাজির খাওয়া দাওয়া


জয়শ্ৰী আচার্যঃ লামডি,

নেতাজির ১২২ তম জন্মদিবসে ওনার সম্বন্ধে নতুন কিছুই বোধয় বলবার নেই আমার।

উনি সর্বসম্মতভাবেই আমাদের একনায়ক, আমাদের গর্ব, আমাদের অনুপ্রেরণা আমাদের দেশপ্রেমের প্রথম পাঠ ও শেষ অঙ্গীকার।

তবুও মনে হয় আরও একটু কাছে যাই ওই মানুষটার যিনি মানুষ হয়েও মহামানব। যিনি আমাদের চোখে এক উপন্যাসের নায়কের চেয়েও বড় প্রহেলিকা। কল্পজগতের থেকেও অবিশ্বাস্য অবাধ যাঁর বিচরণ। সেই মানুষটার খাদ্যাভাস কেমন ছিলো? কি খেতে ভালোবাসতেন তিনি? খাদ্যরসিক হিসেবে এই প্রশ্নটা মাঝে মধ্যেই জাগে আমার মনে।

আজ সেই প্রশ্নগুলোর উত্তর মেলাতে বসলাম

ভীষণ ভালোবাসতেন চা খেতে, দিনে পঁচিশ ত্রিশ কাপ চা খেতেন তিনি। আর খুব প্রিয় পানীয় ছিল গরম জলে বিটনুন দিয়ে লেবুর রস। ভীষণ পছন্দের খাবার ছিলো খিচুড়ি, ভাতেভাত আর * সোনা মুগ ডাল,* মাছের ঝোল আর ভাত

একবার মাঝখানে তিনি মাংস ডিম্ ইত্যাদি সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করেছিলেন শুধুমাত্র মাছ আর সবজি খেতেন আর কিছু ফল (পছন্দের ফল আপেল কলা আর আঙ্গুর) এই ছিলো তখন ওনার জীবনধারণের সহায়।

পছন্দের মিষ্টি ছিলো নারকোলের তৈরী যে কোনো মিষ্টি বিশেষত চিনির পুলি নারকেল নাড়ু মনোহরা তিলের তক্তি ইত্যাদি।

ছাত্রাবস্থায় এবং তারপরেও রাজনৈতিক জীবনের প্রথমদিকে নিয়মিত ছিলেন কফি হাউসের *৪ নম্বর টেবিল এ সেখানে আবার ওনার প্রিয় ছিল চিকেন কাটলেট

প্রচন্ড সুপারি খেতেন নেতাজি এমনকি ব্যাডমিন্টন খেলার সময়ও সুপারি খাবার উল্লেখ রয়েছে ওনার ভাইপোর চিঠিতে, পরে অবশ্য সুপারি সম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়ে হরিতকি খেতেন।

Chain Smoker ছিলেন নেতাজি। সেই নিয়ে নিজের অনুগামীদের বকাঝকাও সহ্য করতে হতো ওনাকে।
ওনার প্রিয় খাদ্যপ্রতিষ্টানগুলোর মধ্যে বেশ কিছু এখনো বর্তমান। একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক।

লক্ষীনারায়ণ সাউ এন্ড সন্স। হাতিবাগানের এই তেলেভাজার দোকানটা আজও ঠিক এই দিনটায় সবাইকে বিনামূল্যে তেলেভাজা বিতরণ করে ওনার স্মৃতিতে। শোনা যায় নেতাজি ওনার জন্মদিন পালন করেছিলেন এই দোকানে।

প্যারামাউন্ট
বঙ্কিম চ্যাটার্জী স্ট্রিটের এই শরবতের দোকানটি ছিলো ওনার খুব প্রিয়। এখনো কলকাতার নামকরা শরবতের আড্ডা।

ইন্ডিয়ান কফি হাউস। আড্ডাজগতের মক্কা হিসেবে প্রখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানের ৪ নম্বর টেবিল এখনো বিখ্যাত নেতাজির স্মৃতিতে।

ফেভারিট কেবিন
সূর্য সেন স্ট্রিট অঞ্চলে আজও এখানে বহু বিদগ্ধ মানুষের  পদধূলি পড়ে, আজও এখানে তুমুল তর্ক চলে, গভীর আলোচনার সারাংশ শোনা যায়। আজও ৪ নম্বর টেবিল শ্রদ্ধার বিষয় এখানেও।

স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেল। আজকের আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী এখানে নিজের হাতে শতরঞ্চি পেতে বন্ধুদের নিয়ে এক আনায় দুবেলা ভরপেট মাছ ভাত খেতেন নেতাজি বহু বছর। কলেজ স্ট্রিটের কাছেই ৮/২ ভবানী দত্ত লেন-এ এখনো স্বমহিমায় চলছে স্বাধীন ভারত হিন্দু হোটেল

La Tour d'Argent.
প্যারিসের ১৫ 15 quai de la Tournelle এ অবস্থিত এই রেস্টুরেন্টটি আজ বিখ্যাত। ১৯৪১ সালে নেতাজির সাথে তৎকালীন ফরাসি প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক আলোচনার প্রেক্ষাপট হিসেবে। এখানেই ওনারা লাঞ্চ মিটিঙে দেখা করেছিলেন।

তথ্য সংগ্রহ- 
শ্রদ্ধেয় মিহির বোস দ্বারা রচিত জীবনী। 
নেতাজির বিভিন্ন সময়ের লেখা চিঠি সংগ্রহ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.