Header Ads

এবার ৪৮ টি তৈলক্ষেত্ৰকেও বহুজাতিক কোম্পানীর হাতে তুলে দেওয়ার প্ৰয়াস শুরু


গুয়াহাটিঃ রাষ্ট্ৰায়ত্ব সংস্থা হিন্দুস্থান পেপার কৰ্পোরেশনের অধীন বরাক উপত্যকার একমাত্ৰ বৃহৎ শিল্প উদ্যোগ কাছাড় পেপার মিল এবং নগাঁও জেলার জাগিরোড পেপার মিল দুটি দীৰ্ঘ ৩ বছর বন্ধ হয়ে আছে। প্ৰায় ৫ হাজার কৰ্মচারী জীবন মরণ অবস্থা বেতন না পেয়ে, চিকিৎসার অভাবে অভুক্ত থেকে দুইজন শ্ৰমিক আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছে। প্ৰায় ৩৯ জন মারা গেছে। এই পেপার মিল দুটির কৰ্মচারীরা পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের ডাক দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল আগামী কাল বরাক উপত্যকায় সফরে যাচ্ছেন। কাছাড় পেপার মিলের কৰ্মচারীরা মুখ্যমন্ত্ৰীর বরাক সফরের প্ৰতিবাদে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে কাছাড় পেপার মিলের শ্ৰমিক সংগঠনের এক মুখপাত্ৰ আজ এ কথা জানান। পেপার মিল দুটিকে বেসরকারীকরণ করার জন্য কেন্দ্ৰীয় সরকার ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেছে। পেপার মিল দুটি বৰ্তমান দুরবস্থায় বেসরকারী কোনও সংস্থায় তা ক্ৰয়ের জন্য এগিয়ে আসছে না। আজ বরাকে বিজেপি সভাপতি রঞ্জিত দাসের উপস্থিতিতে বিজেপির মুখপাত্ৰ ডাঃ রাজদ্বীপ রায় বরাকবাসীকে আস্বস্ত করে বলেন, পেপার মিল দুটি খোলার জন্য কেন্দ্ৰীয় সরকার সব ধরণের ব্যৱস্থা গ্ৰহণ করেছে। তিনি কাছাড় পেপার মিলের দুরবস্থার জন্য কংগ্ৰেস সরকারকে দোষারূপ করেছে। এই পেপার মিল দুটির বিক্ৰি করে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পর এবার অসমের তৈল ক্ষেত্ৰগুলিকেও বেসরকারীকরণের কেন্দ্ৰীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ এক সূত্ৰে জানা গেছে অসমে ও এন জি সির অধীনে ১৮টা এবং অসম অয়েলের অধীনে ৩৮টি তৈল ক্ষেত্ৰ আছে। ও এন জি সির ১৮ টি তৈল ক্ষেত্ৰের উৎপাদন ক্ষমতা হচ্ছে ৭৯১.2 নিযুত টন। এই তৈল ক্ষেত্ৰগুলি বেসরকারীকরণের জন্য গত অক্টোবর মাসেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্ৰীয় সরকার। কিন্তু সংস্থা অফিসারদের তীব্ৰ প্ৰতিবাদের জন্য তা আরবেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয় নি। কেন্দ্ৰীয় সরকার তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে বেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার প্ৰতিবাদে রাজ্যের জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলো ইতিমধ্যে সরব হয়েছে। গত বিধানসভায় এক প্ৰশ্নত্তোর পৰ্বে সরকার জানিয়েছিল অসমের ভূগৰ্ভস্থে বিশাল পরিমাণ কয়লামজুত আছে। যা প্ৰায় ১০০ বছর চলবে। আর তেলের মজুত ভাণ্ডার আছে, তা চলবে প্ৰায় ৫০ বছর। বিগত তরুণ গগৈ সরকার ১২টি তৈল ক্ষেত্ৰ বেসরকারী সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছিল। তখন কিন্তু কোনও প্ৰতিবাদ হয় নি। এবার পঞ্চায়েত নিৰ্বাচনের সময়েই কেন্দ্ৰীয় সরকার অসমের ৪৮টি সহ দেশের ১৪৯ টি তৈল ক্ষেত্ৰ বেসরকারীকরণের সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেছে। তেলের উৎপাদন বৃদ্ধির করার জন্য উচ্চ পৰ্যায়ের এক কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ গুয়াহাটিতে উত্তর পূৰ্বের নীতি ফোরামের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকে নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমার এবং ডনার মন্ত্ৰালয়ের কেন্দ্ৰীয় প্ৰতিমন্ত্ৰী জিতেন্দ্ৰ সিং উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকে উত্তর পূৰ্বাঞ্চলের ৮টি রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। বাঁশ, চা, পৰ্যটন, মৎস্য পালন প্ৰভৃতি নিয়ে আলোচনা হলেও তৈল ক্ষেত্ৰগুলি নিলাম করার ক্ষেত্ৰে কেন্দ্ৰীয় সরকারের স্থিতি স্পষ্ট করে নি। রাজ্যের জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলি ইতিমধ্যে প্ৰস্তাবিত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে আন্দোলনের জন্য পথে নেমেছে। এবার তৈলক্ষেত্ৰের বেসরকারীকরণের প্ৰস্তাবের জন্য পথে নামবে। কেন্দ্ৰীয় সরকারের বক্তব্য অয়েল ইণ্ডিয়া এবং ও এন জি সির তৈল ক্ষেত্ৰগুলির উৎপাদন মাত্ৰ ৫ শতাংশ। লক্ষ্য মাত্ৰা ধাৰ্য্য করা হয়েছে ১০ শতাংশ বেসরকারী করা হলেই উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। হাজার বিরোধিতার মধ্যেও কেন্দ্ৰীয় সরকার তৈল ক্ষেত্ৰগুলি বেসরকারী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার জন্য বদ্ধপরিকর। গত ২২ অক্টোবর প্ৰধানমন্ত্ৰী নরেন্দ্ৰ মোদি উচ্চ পৰ্যায়ের এক বৈঠকে ২০২২ সালের মধ্যে ঘরোয়া হাইড্ৰ'কাৰ্বনের উৎপাদন ১০ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অসমের জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলো কেন্দ্ৰীয় সরকারের সিদ্ধান্তের বিরোধিতার করে অভিযোগ করেছে, বহুজাতিক কোম্পানীগুলো তৈল কূপগুলি খননের লাইসেন্স পেলে রাজ্যে অবাধ খনন শুরু হবে, পরিবেশ প্ৰকৃতি ধ্বংস হবে। তাছাড়া আসাম অয়েল এবং ও এন জি সির কাৰ্যালয়গুলিতে ছাঁটাই পৰ্ব শুরু হবে তা মেনে নেওয়া যায় না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.