রোহিঙ্গা দমনে সু কি'র নীরবতা দুঃখজনক
আশীষ দেঃ লামডিং
রোহিঙ্গা দমনে সু কি'র নীরবতা দুঃখজনক । রাষ্ট্রসংঘ মানবাধিকার কমিশন এর প্রধান প্রিন্স জৈদ রা'দ অল হুসেন, তার কার্যকাল সমাপ্তির দিন বিবিসি কে এক বিবৃতিতে বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপরে সামরিক অভিযানের পর মায়ানমারের de facto নেত্রী আঙ সান সু কি'র উচিত ছিল নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে পদত্যাগ করা । প্রিন্স হুসেন, আরো বলেন তার পদাধিকারবলে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ নস্যাৎ করে বার্মিজ সেনা বাহিনীর মুখপাত্র হওয়া ও সমর্থন করা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ । সু কি অভিযোগ করেন ঘটনাটিকে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে । রাষ্ট্র সংঘের প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে মায়ানমার সেনা রোহিঙ্গাদের 'Genocidal Intent' গনহত্যার উদ্দেশ্যেই, হত্যা ও ধর্ষণ করেছেন । পাঁচজন মুখ্য সেনাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আন্তর্যাতিক বিচারালয়ে মামলা রুজু করে বিচার করার সুপারিশ করা হয়েছে । যদিও মায়ানমারের সরকার এই রিপোর্টকে অতিরঞ্জিত ও মিথ্যা আখ্যা দিয়েছেন । গত সোমবার এই রিপোর্ট সর্বসমক্ষে আনা হয় । সিঙ্গাপুরে একটি সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রোহিঙ্গাদের উপর সৈনিক অভিযানের সমর্থন করেন শান্তি নোবেলজয়ী সু কি । মায়ানমারের বৌদ্ধ সংখ্যাগুরুরা মনে করেন, রোহিঙ্গিয়া জনজাতি মুলত বাঙালী এবং এরা ব্রিটিশ শাসন আমলে মায়ানমারে অবৈধভাবে প্রবেশ করে, যদিও রোহিঙ্গিয়ারা এই তথ্য মানতে রাজি নন, তারা দাবী করেন তারা এই অঞ্চলে আছেন কয়েক শতাব্দী ধরে ।(ব্রিটিশ শাসনকালে মায়ানমার, বর্তমান বাংলাদেশ ও ভারত একটিই সাব কন্টিনেন্ট ছিল) 2012 সনে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও মুসলিম বিরোধী মনোভাব সারা মায়ানমারে বৃদ্ধি পায়, এর মধ্যে মাঝে মাঝে রোহিঙ্গাদের দ্বারা বৌদ্ধদের উপর আক্রমনকে "ধর্ম এবং জাতির" উপর আক্রমণ বলে প্রচার করা হয় । যদিও সাত লক্ষ রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে আনতে মায়ানমার সরকার ও রাষ্ট্র সংঘের মধ্যে একাধিক চুক্তি সই হয়, কিন্তু পরবর্তীতে তারা তাদের নিজেদের অবস্থানে ফিরে যান । এবং রাষ্ট্র সংঘ রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কায় এই চুক্তির উপর নির্ভর করতে পারেন নি । উল্লেখ্য, 2017 এর গণহত্যার পর থেকে রাষ্ট্র সংঘকে রাখাইন অঞ্চলে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয় নি । রাষ্ট্র সংঘ এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা করেন, চাপে পরে রোহিঙ্গা শরণার্থী ফিরে নিয়ে গেলেও তাদের মানবাধিকার উলঙ্ঘন হবেই। এই প্রতিবেদন মায়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একাধিক সুপারিশ করেন, এবং আন্তর্যাতিক আর্থিক সাহায্য বন্ধের দাবি করেন ।
কোন মন্তব্য নেই