Header Ads

ডাইনী হত্যা ও মহিলাদের উপরে বেড়ে চলা অপরাধ নিয়ে হাফলঙে আইনী সচেতনতা সভা


বিপ্লব দেবঃ হাফলং
অসমে ডাইনি হত্যা থেকে শুরু করে মহিলাদের উপর ক্রমাগত বেড়ে চলা অপরাধ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন অসমের মহিলা আয়োগের চেয়ারপার্সন চিকমিকি তালুকদার। শুক্রবার হাফলং সাংস্কৃতিক ভবনে রাষ্ট্রীয় মহিলা আয়োগ ও ডিমা হাসাও জেলাপ্রশাসনের উদ্যোগে অসমে ডাইনী হত্যা থেকে শুরু করে মহিলাদের উপর ক্রমাগত বেড়ে চলা অপরাধ বন্ধ করা নিয়ে এক আইনী সচেতনতা সভা অনুষ্ঠিত এই সভায় অসমে  মহিলাদের উপর যে ভাবে অপরাধ বেড়ে চলছে সেই তথ্য সামনে এসেছে ২০১২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অসমে স্বামীর হাতে নৃশংসতার স্বীকার হওয়ার ঘটনা ৫৬ হাজার ৯০৪ টি যৌননির্যাতনের মত ঘটনার  সংখ্যা ৩২ হাজার ৩২২ টি মহিলা অপহরনের ঘটনা ২৯ হাজার ৩০৮ টি  এবং ধর্ষনের মত ঘটনা সংগঠিত হওয়ার সংখ্যা ১১ হাজার ৫১৭ টি তাছাড়া যৌতকের বলি হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ১ হাজার ৬৮ টি মহিলা পাচারের মত ঘটনা সংগঠিত হয় ৩৭২ টি তবে রাজ্যের তুলনায় ডিমা হাসাও জেলায় মহিলাদের উপর অপরাধের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে অনেক কম বলে জানান ইএসসি হেমাঙ্গ নবিস। ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত যেখানে রাজ্যে মহিলা অপহরনের ঘটনা ঘটেছে ১৯৭৬ টি যৌননির্যাতনের ঘটনা ১২২৯ টি স্বামীর হাতে নৃশংসতার ঘটনা ৩০০০ হাজার ধর্ষনের ঘটনা ৩৫৪ টি যৌতুকের বলি হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ৪৫টি এবং মহিলা পাচারের ঘটনা ১৫ টি। সেই জায়গায় ডিমা হাসাও জেলায় অপহরনের ঘটনা ঘটেছে ৪৩ টি যৌননির্যাতনের ঘটনা ২৩ টি স্বামীর হাতে নৃশংসতার স্বীকার হওয়ার ঘটনা ১৫ টি তাছাড়া ধর্ষনের মত ঘটনা ঘটেছে ১৩ টি এবং যৌতুকের বলি হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ৫টি। এদিন অসমে ডাইনী হত্যা ও মহিলাদের উপর বেড়ে চলা অপরাধ নিয়ে বলতে গিয়ে রিসোর্স পার্সন তথা হাফলং সরকারী মহাবিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপিকা রাখীমণি গগৈ বলেন ডাইনী হত্যা এক অন্ধ বিশ্বাস। তিনি বলেন ২০০১ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত অসমে ডাইনী সন্দেহে ১৯৩ জনকে খুন করা হয়। এর মধ্যে মহিলার সংখ্যা ১১৪ ও পুরুষের সংখ্যা ৭৯। এবং ডাইনী সন্দেহে খুনের ঘটনায় পুলিশ ২০২ টি মামলা দায়ের করেছে। রাখীমণি গগৈ বলেন ২০১৮ সালের ১৩ জুন রাষ্ট্রপতি এক আইন পাস করেন ডাইনী সন্দেহে কাউকে খুন করা হলে আইপিসি-র ৩০২ ধারায় ওই খুনী ব্যক্তির জাবজীবন কারাবাস ও ৫ লক্ষ টাকার জরিমানা হতে পারে এমনকি ফাঁসী ও হতে পারে। রাখীমণি গৈগ বলেন পুলিশের কাজে ও আইন ব্যবস্থার মধ্যে অনেক ফাঁকফোকর থাকার জন্য ডাইনী হত্যার মত ঘটনা বেড়ে চলছে রাজ্যে। তিনি বলেন যে সব গ্রামে আর্থিক ব্যবস্থা খারাপ শিক্ষা ব্যবস্থা নেই এমনকি যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই সেই সব জায়গায় ডাইনী হত্যার মত ঘটনা সংগঠিত হয়। রাখীমণি গগৈ বলেন রাজ্যের গোয়ালপাড়া মাজুলী কোকরাঝাড় বাক্সা চিরাং যোরহাট শোনিতপুর লক্ষীমপুর এসব জেলাতে অন্ধবিশ্বাসের বলি হয়ে ডাইনী সন্দেহে খুনের ঘটনা বেশী সংগঠিত হয়। তিনি বলেন ডাইনী হত্যা বন্ধ করতে সমাজ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে এমনকি মহিলা সংগঠন ও ছাত্রছাত্রীদের সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তনে কাজ করতে হবে। মহিলা সংগঠন গুলিকে এনিয়ে সচেতনতা শিবির করে সমাজ ব্যবস্থা ঠিক করার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে তাহলেই  ডাইনী হত্যা রোধ করা সম্ভব হবে। এদিন হাফলং আইনী সচেতনতা সভায় উপস্থিত সবাই ডাইনী হত্যা ও মহিলাদের উপর অপরাধ রোধে সবাই একজোট হয়ে কাজ করতে হবে এবং মহিলাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকার ও প্রশাসন যন্ত্রকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এবং মহিলাদের সঙ্গে  অপরাধে জড়িত  দোষী ব্যক্তিদের কঠোর ও দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদান করা হলেই মহিলাদের উপর অপরাধের ঘটনা কিছুটা কমতে পারে বলে মন্তব্য করেন বিভিন্ন বক্তারা। এদিন অনান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অসম মহিলা আয়োগের সদস্য নিয়তি দে ডিমা হাসাও জেলার জেলাশাসক অমিতাভ রাজখোয়া পুলিশসুপার প্রশান্ত শইকীয়া উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের যুগ্মসচিব এইচ রিয়ামে অবসরপ্রাপ্ত আইএস অফিসার সুভাষ লংমাইলাই প্রমুখ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.