কালিমালিপ্ত হলো নোবেলজয়ী সু চি, মায়ানমার সরকার দ্বারা রয়টারের দুজন সাংবাদিকের কারাদন্ড
রয়টারের দুজন সাংবাদিককে সাত বছর কারাদণ্ড দিয়ে নোবেলজয়ী সু চি'র অবশিষ্ট ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত হল। এই সাংবাদিকদের অপরাধ তারা রোহিঙ্গাদের উপর সামরিক বাহিনীর হত্যা ও ধর্ষণের খবর ছেপে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন । এযাবৎ জুন্টা শাসনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ও আন্তর্জাতিক স্তরে প্রশ্ন তোলা সু চি, কিন্তু এদের পক্ষে একটিও শব্দ খরচ করেননি, মুক্ত সংবাদ মাধ্যম, ও স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে সওয়ালকারী সু চি, বিদেশী সংবাদ মাধ্যমের চোখের মণি হয়ে উঠেছিলেন । জুন্টা জমানায় সু চি দীর্ঘদিন গৃহে বন্দি ছিলেন, মায়ানমারের সংবাদ মাধ্যমকে রুদ্ধ করা হয়েছিল, একমাত্র ভরসা ছিলেন বিদেশী সাংবাদিকরা তারাই তার শান্তি ও গণতন্ত্রের বার্তা পৌঁছে দিতেন সারা বিশ্বে । তার সেই চটকদার ইমেজ কে তুলনা করা হতো, দলাই লামা, নেলসন ম্যান্ডেলা ও মার্টিন লুথার কিং এর সাথে। সু চি, বর্তমানেও মায়ানমারের জনগনের কাছে যথেষ্ট প্রিয় । তবে তার দেশের গণতন্ত্র সমর্থকেরা মনে করেন সেনা বাহিনীর উপর তার নিয়ন্ত্রন সীমিত, সু চি, ৫০ বছর পর গণতন্ত্রের স্বাদ পান । রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনীর অত্যাচার প্রসঙ্গে তার অবস্থান আন্তর্জাতিক মহল বিরূপ মনোভাব পোষণ করছেন। এমনকি তার নোবেল পুরস্কার ফিরিয়ে নেওয়ার দাবিও ওঠে মানবাধিকার কর্মীদের মধ্যে । তার প্রাক্তন সমর্থক ও বন্ধুদের কাছে তিনি বর্তমানে ব্রাত্য ।রাষ্ট্র সংঘ দ্বারা প্রকাশিত রিপোর্ট অভিযোগ করেছেন যে, রোহিঙ্গাদের সম্পুর্ন ভাবে শেষ করতেই এই গণহত্যা ।
সোমবার রয়টারের দুই সাংবাদিক ওয়া লোন ও কিও সো, কে জেলে পাঠানোর পর সাংবাদিকদের মধ্যে ভীতি দেখা যাচ্ছে । এই দুই সাংবাদিকের বিচার চলাকালীন সু চির মধ্যস্থতা করার অনুরোধ করা হয়েছিলো বিভিন্ন মহল থেকে, তিনি তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া জানান । US কুটনৈতিক বিল রিচার্ডসন, যিনি একসময় সু চির খুবই কাছের ছিলেন, দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এই দুই সাংবাদিককে তিনি তিরস্কৃত করেন ও বিশ্বাসঘাতক আখ্যা দেন।তিন বছর আগে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই শুরু হয় সংবাদ মাধ্যমের সাথে সম্পর্কের অবনতি । ২০১৭ সনে ২০জন সাংবাদিককে বিতর্কিত মানহানি আইনে মামলা করে কারাদণ্ড করা হলেও তিনি তাদের সমর্থন করেন নি । সু চি কে রাখাইন বিপন্নতাকে অন্যভাবে পেশ করা ও রিপোর্টে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে। সু চি, নিয়ন্ত্রিত মায়ানমারের সূচনা মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রভাবিত সংবাদ মাধ্যম রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচারের বিপক্ষে কথা বলে এসেছেন এবং বিদেশী সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবরকে অতিরঞ্জিত ও মিথ্যা বলে এসেছেন ।
কোন মন্তব্য নেই