বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ NDRF টীম পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন
আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে বন্যার সতর্কতা
আশীষ দেঃ লামডিং
চীনের সাংপো নদীর অববাহিকায় প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাতের ফলে আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে বন্যা হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন চীনা সরকার । সাংপো নদী অরুণাচল প্রদেশে সিয়াং নদী ও আসামে ব্রম্হপুত্র বলে পরিচিত অরুণাচল ও আসাম সরকার এই খবর পাওয়ার পর তাদের রাজ্যে নতুন করে লাল সতর্কতা জারি করেছেন । চীনা সরকারের রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, 9920 কিউবি সেন্টিমিটার প্রতি সেকেন্ড, জল ছাড়ার পর সাংপো নদীতে জলস্ফীতি দেখা যাচ্ছ , যা গত পঞ্চাশ বছরে হয় নি। এই মুহূর্তে আসামের তিনটি নদী ধানসিড়ি, ব্রম্হপুত্র ও জিয়া ভরালী তাদের বিপদ সীমার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে , ফলে 1488 জনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । সিয়াং নদীর নিম্ন প্রবাহের এর জেলা ডিব্রুগড় সহ একাধিক জেলা আধিকারিককে জেলায় উপস্থিত থেকে যে কোন পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । আসামের জল বিশেষজ্ঞ ডাঃ পার্থ জ্যোতি দাসের মতে, গত জুলাই মাস থেকে সাংপো নদীতে জলস্ফীতি দেখা যায়, যার অনেকগুলি কারনে হতে পারে, সাংপো নদীর ধারে ভূমিস্থলন বাঁধ (landslide dam) যা একটি প্রাকৃতিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, ফলে নদীতে অনেক বেশি জলের প্রবেশ হয়। গত নভেম্বরে একাধিকবার ভূমিকম্পের ফলে সাংপো নদীর ভূমিস্থলন বাঁধ ভেঙে পড়ে, ফলে জলের রঙ কখনো খয়েরী এবং কালো হয়ে গেছে । এই বিষয়টি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার দ্বারা সমর্থিত । চীনা সরকারের এই রিপোর্ট উভপার্শ্বীয় সমঝোতার ভিত্তিতে সাংপো নদীর তিনটি চিহ্নিত করা স্থান থেকে কি পরিমান জল ছাড়া হয়েছে তার তথ্য পাঠান । ডাঃ দাস বলেন, আমাদের শুধুমাত্র হাইড্রোলজিক্যাল তথ্য নয়, সাংপো অববাহিকার বিস্তারিত টপোগ্র্যফিক তথ্য দিতে হবে, তাহলে বিপজ্জনক কতগুলো ভূমিস্থলন বাঁধ আছে তার সঠিক সংখ্যা পাওয়া যাবে ও তার উপর নির্ভর করবে এই দুই রাজ্যের ভবিষ্যৎ বন্যা পরিস্থিতি । আসামের রাজ্য বিপর্যয় পরিচালন প্রাধিকরণ জানিয়েছেন যে, এ বছর পঞ্চাশ জনের বন্যায় মৃত্যু হয়েছে । All India Radio মতে গোলাঘাট ও ধেমাজী জেলায় 15, 000 হাজার লোক বন্যা দুর্গত, এবং 600 হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে । গোলাঘাটের বাসিন্দারা নাগাল্যান্ড সীমান্তে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন "নর্থ ইস্ট এনার্জি পাওয়ার কর্পোরেশন" এর ( NEEPCO) বিরুদ্ধে । নিপকো দয়াং নদীর জল নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশী জল ছাড়ছেন , ফলে ধানসিড়ি এলাকায় কয়েক হাজার গ্রাম প্লাবিত । অরুণাচল প্রদেশের সিয়াং জেলার ডেপুটি কমিশনার টি টাকু ঐ এলাকার বাসিন্দাদের নদীতে মাছ ধরা, স্নান করতে নিষেধ করেছেন । নিচু এলাকা যেমন কি; জারুক , পাগলেক , এস এস মিশন, জারকাং , বানসকোটা, সিগর ইত্যাদি যা সিয়াং নদীর তীরে অবস্থিত এখানে সতর্কতা জারি করা হয়েছে । নাগাল্যান্ডে বন্যায় 12 জনের মৃত্যু হয়েছে, মুখ্য মন্ত্রী নেফিউ রিও, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সাহায্যের জন্য আবেদন করেছেন । বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় গৃহ মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ NDRF টীম পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন
কোন মন্তব্য নেই