Header Ads

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে গার্ড অব ওর্নার নিচ্ছেন সিইএম দেবলাল গার্লোসা


বিপ্লব দেবঃ হাফলংঃ 
স্বীধানতার ৭২ বছর পূর্ন হলে অসমের অন্যতম পাহাড়ি জেলা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের সিইএম দেবোলাল গার্লোসা। ৭২ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বুধবার ৪৩ আসাম রাইফেলস খেলার মাঠে সরকারি ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে ভাষন প্রসঙ্গে সিইএম দেবোলাল গার্লোসা বলেন ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫২ সালে পাহাড়ি জেলার মানুষের উন্নয়ন তথা বিভিন্ন জাতি জনগোষ্ঠীর ভাষা কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষিত করে রাখার জন্য পরিষদ গঠন হয়।  কিন্তু ১৯৫২ সালে পরিষদ গঠন হওয়ার পর পাহাড়ি জেলার যতটুকু উন্নয়ন হওয়ার কথা ছিল তা হয়নি। তবে কেন্দ্র রাজ্য ও পার্বত্য পরিষদে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরই পাহাড়ি জেলায় উন্নয়নের কাজ শুরু হয়েছে বলে নিজের ভাষনে উল্লেখ করে সিইএম নিজের ভাষনে বলেন শিক্ষা স্বাস্থ্য সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা পর্যটন থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রেই ধীরে ধীরে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলছে পাহাড়ি জেলা। সিইএম নিজের ভাষনে বলেন পন্ডিত দীন দয়াল উপাধ্যায় বিদ্যুতি করন প্রকল্পে ডিমা হাসাও জেলার ৮৫ শতাংশ গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। রাজ্যসরকারের সহযোগিতায় পার্বত্য পরিষদের বেতন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে চলছে। তিনি বলেন ডিমা হাসাও থেকে হেলিকপ্টার পরিষেবা শুরু করার লক্ষ্যে হাফলঙের পার্শ্ববর্তী দিবারাই গ্রামে হেলিপেড নির্মান কাজ চলছে। দেবোলাল ভাষন প্রসঙ্গে বলেন বিরোধী দল গুলি যে বারবার আমাকে জঙ্গি বলে বিভিন্ন সময় মন্তব্য করে থাকে এর তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন হ্যাঁ আমি এক সময় জঙ্গি ছিলাম তা সবাইর জানা রয়েছে পাহাড়ি জেলার মানুষের অধিকার আদায়ে এক সময় সশস্ত্র আন্দোলন করেছি।  কিন্তু ২০০৯ সালে সশস্ত্র আন্দোলন ছেড়ে অস্ত্র সংবরন করে সংবিধানের নিয়ম মেনেই  সিইএম নির্বাচিত হয়েছি।  কিন্তু বিরোধী দল গুলির সমালোচনা করেন। দেবোলাল নিজের ভাষনে বলেন ২০০৯ সালের ২ অক্টোবর সশস্ত্র আন্দোলন ছেড়ে ডিএইচডি উভয় গোষ্ঠী অস্ত্র সংবরন করে জাতীয় জীবনের মূলস্রোতে ফিরে আসে তখন তৎকালীন অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুন গগৈ বলে ছিলেন একশো দিনের মধ্যে ডিএইচডির সমস্যা সমাধান করবেন কিন্তু সে সময় সরকার কথা রাখতে পারেনি। এমনকি কেন্দ্র ও রাজ্যসরকারের সঙ্গে মস চুক্তি সাক্ষর হওয়ার পরও তৎকালীন ইউপিএ সরকার মস চুক্তির সফল রূপায়নে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। তবে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার মস চুক্তি অনুসারে কেন্দ্র সরকার ১২২ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ প্রদান করে এবং এই অর্থ জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজে ব্যয় করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সিইএম দেবোলাল গার্লোসা। এদিন সরকারি ভাবে আয়োজিত ৭২ তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে সিইএম দেবোলাল গার্লোসা স্বাধীনতা সংগ্রামে আত্ম বলিদান করা বীর শহীদদের স্মরণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারপর স্বাধীনতা দিবসের প্যারেডে অংশ গ্রহনকারী পুলিশ ব্যাটেলিয়ন এনসিসি স্কাউট গাইডদের অভিবাদন গ্রহন করেন সিইএম। বুধবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অনান্য অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল সকাল ছয়টা জনসংযোগ বিভাগের স্থায়ী মাইক যোগে দেশাত্মবোধক সঙ্গীত পরিবেশন। পুলিশ এনসিসি স্কাউট গাইডদের মার্চ পাষ্ট। পাহাড়ি জেলায় বসবাস রত বিভিন্ন ভাষাভাষী ও জাতি জনগোষ্ঠীর পরম্পরাগত লোক নৃত্য। ২০১৮ বর্ষের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ডিমা হাসাও জেলার কৃতী ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা প্রদান করা সহ মাধ্যমিকে জেলায় ১০০ শতাংশ ফলাফল করা ছয়টি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের জেলাপ্রশাসনে পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। তাছাড়া মার্চপাষ্টে প্রথম দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান দখল করে যথাক্রমে হাফলং ডনবস্কো হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল সেইন্ট এগনেস কনভেন্ট হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল ও হাফলং সরকারি উচ্চতর বালিকা বিদ্যালয়। এদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন সিইএম দেবোলাল গার্লোসা। বিকেলে অনুষ্ঠিত জেলাপ্রশাসন একাদশ ও পার্বত্য পরিষদ একাদশের মধ্যে প্রীতি ফুটবল ম্যাচ। বুধবার স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী সমগ্র উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে কৃষকদের ট্র্যাক্টর বিতরন করেন পার্বত্য পরিষদের সিইএম দেবোলাল গার্লোসা। তাছাড়া স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এদিন উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক বীরভদ্র হাগজার পার্বত্য পরিষদের চেয়ারপার্সন রানু লাংথাসা জেলাশাসক অমিতাভ রাজখোয়া পুলিশসুপার প্রশান্ত শইকীয়া ৪৩ আসাম রাইফেলসের কমান্ডিং অফিসার বিএসএফের কমান্ডিং অফিসার সহ বিভিন্ন সরকারী বিভাগের আধিকারিকরা। এদিকে মহকুমা সদর মাইবাং দিসরু কালচারেল মাঠে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন মহকুমা শাসক এন কে দেবনাথ এবং হারাঙ্গাজাও খেলার মাঠে পতাকা উত্তোলন করেন পার্বত্য পরিষদের অধীনে থাকা পশু চিকিৎসা ও পশুপালন বিভাগের দায়িত্ব প্রাপ্ত ইএম আমেন্দু হোজাই।
   


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.