Header Ads

অসমে এন আর সি উদ্ভূত পরিস্থিতিতে প্ৰতিবেশী রাজ্যগুলিতে বিতাড়ন পৰ্ব শুরু হয়েছে


ডিটেনশন ক্যাম্পে ছেলে বউ, শোকে মৃত্যু মায়ের

গুয়াহাটিঃ অসমে এন আর সি উদ্ভূত পরিস্থিতির প্ৰেক্ষিতে ভয় ও আতঙ্কের পরিবেশ অব্যাহত। এন আর সি থেকে বাদ পড়েছে ৪০ লক্ষ ৭ হাজার ৭০৭ জন। বাদ পড়া মানুষগুলির রাতের ঘুম উবে গেছে। ইতিমধ্যে একজনের আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। গুয়াহাটি মহানগরের এক বিশিষ্ট সাংবাদিক মনীন্দ্ৰ রায়ের এন আর সি তালিকায় নাম অন্তর্ভূক্ত না হওয়ায় ভয় ও আতঙ্কগ্ৰস্থ হয়ে অবসাদে ভূগে হঠাৎই হৃদরোগে আক্ৰান্ত হয়ে মারা গেলেন। অসমে সংঘ পরিবারের অন্যতম প্ৰতিষ্ঠাতা প্ৰাণোতোষ রায়ের নামও এন আর সি তালিকায় নেই। এই রকম হাজার হাজার বৈধ ভারতীয় নাগরিকের নাম এন আর সি তালিকায় অন্তৰ্ভূক্ত হয় নি, অপরদিকে বহু বাংলাদেশীর নাম এন আর সি তালিকায় অন্তৰ্ভূক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ আসছে। এন আর সি তালিকায় নাম অন্তৰ্ভূক্তের প্ৰক্ৰিয়া চলার সময় এক হিন্দীভাষী মহিলা পুত্ৰ শোকে মূহ্যমান হয়ে মারা গেলেন। তিনসুকিয়া জেলার দীনেশ প্ৰজাপতি এবং তার পত্নী তারা প্ৰজাপতি অসমে জন্ম গ্ৰহণ করা সত্বেও ‘ডি' ভোটারের তকমা সেটে দেওয়া হয়। তাদের দুইজনকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়। তা মেনে নিতে পারেন নি, তাদের মা ছোটকি প্ৰজাপতি (৭০)। তার এই মৃত্যুকে ঘিরে রাজ্যে প্ৰশ্ন উঠেছে বাংলাভাষী হিন্দু-মুসলিম ধৰ্মালম্বী মানুষদের এত দিন ‘ডি' ভোটারের কলঙ্ক আরোপ করা হচ্ছিল। বিজেপি বিধায়ক অশোক সিংঘল এই মৃত্যুতে গভীর অসন্তোষ প্ৰকাশ করেছেন। এবার বাংলাভাষী না হওয়া সত্বেও অন্য জনগোষ্ঠীর মানুষকেও ‘ডি' ভোটারের বদনামের ভাগীদার করা হচ্ছে বলে রাজ্যের সংখ্যালঘু সংগঠনগুলি অভিযোগ করেছে। এন আর সির চূড়ান্ত তালিকা আগামী ডিসেম্বর মাসে প্ৰকাশ পাবে তখন প্ৰমাণিত হবে কে বিদেশী কে স্বদেশী। অথচ প্ৰতিবেশী রাজ্য অরুণাচল প্ৰদেশ, মেঘালয়, নাগাল্যাণ্ড, মিজোরাম প্ৰভৃতি রাজ্যের এন আর সির নথি- পত্ৰ দেখে বেআইনীভাবে বিতাড়ন পৰ্ব শুরু হয়েছে। অরুণাচল প্ৰদেশ থেকে প্ৰায় ৮০০ মানুষকে বিতাড়ন করা হয়েছে। এই মানুষগুলিকে অসমে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্ৰ পরিষদ নাগাল্যাণ্ড, মিজোরামের মতো ইনার লাইন পারমিট চালু করার দাবি জানিয়েছে। রাজ্যের বাঙালি সংগঠনের একাংশ প্ৰতিনিধি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্ৰী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করে অসমের পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ দাবি করেছে। মমতা বেনাৰ্জি অভিযোগ করেছেন, অসমে বাদ পরা ৪০ লক্ষ মানুষের মধ্যে ৩৮ লক্ষ বাংলাভাষী, অধিকাংশ বাঙালি মুসলিম। অসমের পরিস্থিতি অধ্যয়ন করে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্ৰহণ করার জন্য তিনি এক প্ৰতিনিধি দল অসমে পাঠাবার সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করেছেন বলে তৃণমূল সূত্ৰে জানা গেছে। প্ৰাক্তন বিধায়ক গোপীনাথ দাসকে কাৰ্যবাহী সভাপতি, অন্তোষ চৌধুরী, সোনারুল শাহ মোস্তাফা, শঙ্কর দে প্ৰমুখ ১১ জনকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্ৰেসের অসম রাজ্য কমিটি পুনর গঠন করা হয়েছে। অসমের দায়িত্ব প্ৰাপ্ত পৰ্যবেক্ষক পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্ৰী ফিরহাদ হাকিম তা অনুমোদন জানিয়েছে বলে গোপীনাথ দাস জানান। মাত্ৰ ২ মাসের জন্য অস্থায়ীভাবে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। অসমের সৰ্বশেষ পরিস্থিতি পৰ্যালোচনা করে তারা তৃণমূল কংগ্ৰেসের নেতৃবৃন্দের কাছে এক প্ৰতিবেদন দাখিল করবে। বরাক এবং ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকার প্ৰত্যেকটি জেলা সফর করে তারা পরিস্থিতি পৰ্যালোচনা করবে। ১৪টি বাঙালি সংগঠনের প্ৰতিনিধি গত শনিবার দিল্লীতে কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ৩৬ দফা দাবি সংক্ৰান্ত এক স্মারক পত্ৰ প্ৰদান করেছেন বলে জানা গেছে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.