Header Ads

অসম চুক্তির বিরোধী কোনও সিদ্ধান্ত অগপ, কংগ্ৰেস মানবে না


জাতীয় নাগরিকপঞ্জী তালিকা প্ৰকাশের প্ৰাককালে ২০১৪ সাল পৰ্যন্ত হিন্দু বাঙালিদের বৈধতা দেওয়ার কেন্দ্ৰীয় সিদ্ধান্তে রাজ্যে বিরূপ প্ৰতিক্ৰিয়া
গুয়াহাটিঃ অসম চুক্তির আধারে ১৯৭১ সালের ২৫ মাৰ্চের আগে আসা মানুষদের অন্তৰ্ভূক্ত করে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এন আর সি) নবায়নের কাজ শেষ পৰ্যায়ে। নাগরিকপঞ্জীর দ্বিতীয় খসড়া প্ৰকাশের মাত্ৰ ৪ দিন আগে কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰ প্ৰতিমন্ত্ৰী কিরেন রিজিজু বুধবার রাজ্যসভায় পশ্চিমবঙ্গের সাংসদ রূপা গাঙ্গুলি এবং অসমের রিপুন বরার এক প্ৰশ্নের জবাবে জানালেন, অসমে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পৰ্যন্ত যে সব হিন্দু ধৰ্মাবলম্বী মানুষ অসমে আগে থেকে আছে তাদেরকে বৈধ নাগরিক হিসাবে গণ্য করা হবে, তিনি কাৰ্যত বাঙালি হিন্দুদের রক্ষণাবেক্ষণের কথায় বলেছেন। এই ঘোষণার পর থেকেই অসমের রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্ৰুত পরিবৰ্তন হতে শুরু করে। বিজেপি সরকারের শরিক অগপ, কংগ্ৰেস এবং অন্যান্য সংগঠন প্ৰতিবাদে ফেটে পড়ে। অগপ সভাপতি তথা মন্ত্ৰী অতুল বরা আজ হুঙ্কার দিয়ে বলেন, তারা এই সিদ্ধান্ত কোনও পৰ্যায়ে মানবে না। দরকার হলে সরকার থেকে সরে আসবে। অগপর কাৰ্যবাহী সভাপতি তথা মন্ত্ৰী কেশব মহন্ত একই হুমকি দেন। প্ৰাক্তন মুখ্যমন্ত্ৰী প্ৰফুল্ল কুমার মহন্ত অভিযোগ করেন, বিজেপি হিন্দুদের ভোট ব্যাঙ্ক হিসাবে কাজে লাগাতে চাইছে, তাই কেন্দ্ৰীয় মন্ত্ৰী তড়ি ঘড়ি করে সংসদে হিন্দু বাংলাদেশীদের সপক্ষে বিবৃতি দিলেন। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আইনে পরিণত হলে অসমের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। রিজিজুর এই ঘোষণাকে কেন্দ্ৰ করে বরাক-ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকার কংগ্ৰেস দলের মধ্যে কিছুটা বিভাজনের সৃষ্টি হয়েছে। কংগ্ৰেসের নব নিযুক্ত পৰ্যবেক্ষক হরিশ রাওয়াত আজ প্ৰথম অসম সফরে এলেন। সি পি যোশীর স্থালাভিষিক্ত হলেন রাওয়াত। তার উপস্থিতিতে কংগ্ৰেস নেতারা কিরন রিজিজুর বক্তব্যের তীব্ৰ সমালোচনা করেন। কংগ্ৰেস পরিষদীয় দলের নেতা দেবব্ৰত শইকিয়া বলেন, বিজেপি হিন্দু-মুসলিম বিভাজনের রাজনীতি শুরু করল। অসম চুক্তির আধারে নাগরিকত্ব সংশোধন করতেই হবে। ২০১৪ ভিত্তিবৰ্ষ তারা মানবে না। বরাকের কংগ্ৰেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ বলেন, শুধু হিন্দুরা নয় ২০১৪ সাল পৰ্যন্ত এই রাজ্যে থাকা হিন্দু-মুসলিম উভয়কে বৈধ নাগরিক হিসাবে গণ্য করতে হবে। তারা প্ৰথম থেকে বিধানসভাতে একই দাবি জানিয়ে আসছে। জাতীয় নাগরিকপঞ্জী দ্বিতীয় খসড়া তালিকার প্ৰাককালে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন বিতৰ্কের মাঝেই আগামী ৩০শে জুলাই দিনের বেলায় দ্বিতীয় খসড়া তালিকা প্ৰকাশ পাবে। রাজ্যের পুলিশ প্ৰধান কুলধর শইকিয়া, কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰকের যুগ্ম সচিব সত্যেন্দ্ৰ গাৰ্গ, মুখ্য সচিব টি ওয়াই দাস, মিডিয়া এ্যাডভাইসার হৃষীকেশ গোস্বামী, এন আর সির সমন্বয় প্ৰতীক হাজেলা এবং রাজ্যের সব ডি সি, এস পির উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল রাজ্যের আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি পৰ্যালোচনা করেন। ডি জি পি কুলধর শইকিয়া জানান, রাজ্যে ইতিমধ্যে ২২০ কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। রাজ্যের প্ৰতিটি জেলায় স্পৰ্শকাতর অঞ্চলে থাৰ্ড লাইন ডিফেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কেন্দ্ৰীয় সরকার, রাজ্য সরকার এবং গোয়েন্দা প্ৰধানদের সঙ্গে সমন্বয় গড়ে রাজ্যের প্ৰতিমূহূৰ্তে আইন শৃঙ্খলার পৰ্যালোচনা করা হচ্ছে। কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰক আগে রাজ্য সরকারকে সতৰ্ক করে দিয়ে বলেছে, বৰ্হিশক্তি অসমের এন আর সি প্ৰক্ৰিয়াকে বানচাল করার ষড়যন্ত্ৰ করছে। প্ৰতীক হাজেলা জানিয়েছেন, তারা প্ৰস্তুত এক নিয়ন্ত্ৰণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে। ল্যাণ্ড লাইন নম্বর ০৩৬১-২৪৬৩৩০৩। বৈধ নাগরিকদের নাম যাতে বাদ না পড়ে তাই সুপ্ৰীমকোৰ্টের প্ৰত্যক্ষ তত্বাবধানে নিরপেক্ষ ন্যায় সঙ্গত এবং নিখুতভাবে এন আর সি নবায়নের চূড়ান্ত কাজ চলছে। ৩০শে জুলাই দ্বিতীয় খসড়া তালিকা প্ৰকাশের পর ৭ আগষ্ট থেকে ২৮ সেপ্তেম্বর পৰ্যন্ত দাবি আপত্তি করার সময় ধাৰ্য করা হয়েছে। তিনটি ফৰ্ম পুরণের ব্যবস্থা হয়েছে। তালিকায় নাম না উঠলে প্ৰথম ফৰ্ম পূরণ করতে হবে, আগের নথিপত্ৰ পুনরায় দাখিল করা যাবে। দ্বিতীয় ফৰ্ম নাম ঠিকানা ভুল ভ্ৰান্তির সংশোধনের জন্য, কোনও অযোগ্য ব্যক্তির নাম খসড়ায় অন্তভূক্ত হলে যে কোনও ব্যক্তি সেই অযোগ্য এবং সন্দেহজনক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করতে পারবে। এই তৃতীয় ফৰ্ম নিয়ে অনেকে আপত্তি প্ৰকাশ করেছে। কেন্দ্ৰীয় স্বরাষ্ট্ৰমন্ত্ৰক বারবার রাজ্য সরকারকে সতৰ্ক করে দিয়ে বলছে, এন আর সি তালিকায় নাম অন্তভূক্ত না হলেও কোনও ব্যক্তিকে প্ৰশাসনিক হয়রানি যাতে না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে। কাউকে যেন ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো না হয় এবং সব চেয়ে তাৎপৰ্যপূৰ্ণ কেন্দ্ৰীয় নিৰ্দেশ তালিকায় অন্তভূক্ত না হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে মানবিক আচরণ করতে হবে। এবং আত্মপক্ষ সমৰ্থনের যথেষ্ট সময় ও সুযোগ দিতে হবে। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.