Header Ads

অন্নবালা রায়কে ছেড়ে দেওয়া হেচ্ছ বাকি ৯৮৬ জনের মামলা পুনর বিবেচনা করার দাবি হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরীর


আগে ছিল ডি ভোটার এবার হবে ডি সিটিজেন, কোনও অধিকার থাকবে না
গুয়াহাটিঃ জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর (এন আর সি) দ্বিতীয় খসড়া তালিকা ৩০ জুলাই প্ৰকাশ পাবে। গত ডিসেম্বরের রাত ১২টায় ডাক-ঢোল বাজিয়ে ১কোটি ৯০ লক্ষের ‘নিখুত এবং শুদ্ধ' তালিকা প্ৰকাশ করা হয়েছিল। গত ২ জুলাই সুপ্ৰীমকোৰ্ট জানিয়ে দিল, আগের তালিকা শুদ্ধ ছিল না। জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর সমন্বয়ক প্ৰতীক হাজেলা জানিয়ে দিলেন, প্ৰায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়বে। কেন বাদ পড়বে, কি তার কারণ সেই সম্পৰ্কে স্পষ্ট কোনও ধারণা দিতে পারলেন না।পরে গুয়াহাটিতে সাংবাদিকদের জানান একাংশ এন আর সি সেবা কেন্দ্ৰে অফিসারদের বিপথে পরিচালনা করার জন্য একাংশ কৰ্মী ভুল নথি-পত্ৰ গেঁথে দিয়েছে। তার বেশ কিছু দিন আগে হঠাৎ-ই এন আর সি কতৃপক্ষ এন আর সি কাজে নিয়োজিত ৩৫জন কৰ্মচারিকে বিভিন্ন জায়গায় বদলি করে দেয়। এবং পাণ্ডু মালিগাঁও অঞ্চলের বাঙালি প্ৰধান এলাকায় ১৬ জন কৰ্মচারিকে কারণ দৰ্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নাগরিক অধিকার সুরক্ষা সমিতির (সি আরা পি সি) উপদেষ্টা তথা বিশিষ্ট আইনজীবি হাফিজ রশিদ আহমেদ চৌধুরী আজ অভিযোগ করেন, যে সব অফিসার কৰ্মী এন আর সি নবায়নে ভুল কাজ করেছেন, ভূয়া নথি সন্নিবিষ্ট করেছে তাদেরকে চিহিত করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। একাংশ কৰ্মচারির ভুলের খেসারত কেন দেবে রাজ্যের সংখ্যালঘু মানুষ? তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্যের ৬ টি ডিটেনশন ক্যাম্পে ৯৮৬ জন বন্দী অবস্থায় আছে। চিরাংয়ের অন্নবালা রায়কে বিদেশী বলে গত ২৩ জুন ডিটেনশন ক্যাম্পে ভরে দেওয়া হয়েছিল।পরে বিদেশী শনাক্তকরণ ট্ৰাইব্যুনাল জানায় অন্নবালা রায় বিদেশী নয়। নাগরিকত্বের নথি-পত্ৰ আছে তাকে ছেড়ে দেওয়ার নিৰ্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা তুলে ধরে হাইকোৰ্টের বিশিষ্ট আইনজীবি হাফিজ রশিদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক ৯৮৬ জনের মধ্যে অধিকাংশ ভারতীয়। এক পক্ষীয়ভাবে রায়ের ফলে তাদেরকে বিদেশী বানানো হয়েছে। অন্নাবালা রায়ের ক্ষেত্ৰে যেমন ট্ৰাইব্যুনাল পুনরবিবেচনা করে তাকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বাকিদের ক্ষেত্ৰেও পুনর বিবেচনার দাবি জানান তিনি। কোচ রাজবংশী জনগোষ্ঠীর প্ৰতিনিধি অন্নাবালা, তাকে বিদেশী বলে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর সঙ্গে সঙ্গে আক্ৰাসু নিম্ন অসমে আন্দোলন শুরু করে, তার ফলশ্ৰুতি হিসাবে অন্নাবালাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্নবালা বাঙালি হলে হয়তোবা ছেড়ে দেওয়া হতো না। আইনজীবি চৌধুরী অভিযোগ করেন, পরিকল্পিতভাবে হিন্দু-মুসলিম বাঙালি সংখ্যালঘু মানুষদের নাম তালিকা থেকে বাদ দিতে চাইছে এন আর সি কৰ্তৃপক্ষ। তিনি এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, রাজ্যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ডি ভোটার, ডিটেনশন ক্যাম্পে ৯৮৬ জন, বিদেশী ট্ৰাইব্যুনালে মামলা ঝুলছে ১ লক্ষ ৭২ হাজার, এবার তাদের আত্মীয়-স্বজন, পরিবার-পরিজন সদস্যদের নামও বাদ পড়বে। তাঁর আশঙ্খা প্ৰায় ২০ লক্ষ মানুষদের নাম বাদ পড়বে। তাদের ভাগ্যে কি ঘটবে তা অনিশ্চিত! বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ভারতের কোনও প্ৰত্যৰ্পণ চুক্তি হয় নি। এন আর সি কৰ্তৃপক্ষ জানিয়েছে চূড়ান্ত খসড়া তালিকা প্ৰকাশের পর ১ মাস সময় দেওয়া হবে দাবি আপত্তি জানানোর জন্য। বিশিষ্ট আইনজীবি চৌধুরী বলেন, প্ৰথমে এন আর সি কৰ্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে হবে, সেখানে নথি-পত্ৰ গ্ৰাহ্য না হলে যেতে হবে বিদেশী শনাক্তকরণ ট্ৰাইব্যুনালে। সেখানে খারিজ হলে হাইকোৰ্টে এবং সুপ্ৰীমকোৰ্টে দ্বারস্থ হতে হবে। যা দীৰ্ঘ এক আইনী প্ৰক্ৰিয়া সময় লেগে যাবে ১০-১৫ বছর। এই দীৰ্ঘ বছর এন আর সি তালিকায় অন্তভূক্ত না হওয়া মানুষগুলি আগে ছিল ‘ডি ভোটার' এখন  ‘ডি সিটিজেন' হিসাবে গণ্য হবেন।কোনও অধিকার থাকবে না।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.