Header Ads

বরাক, মেঘালয়, নাগাল্যাণ্ড, মাৰ্ঘারিটার কয়লা কেলেঙ্কারিকে সিবিআই-র তদন্তের আওতায় আনার দাবি বিরোধী দলপতি দেবব্ৰত শইকিয়ার


কয়লা মাফিয়া আব্দুল আহাদ চৌধুরীর দাপট বিজেপির রাজত্বে বেড়ে গেছে দাবি কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থের

গুয়াহাটিঃ দুৰ্নীতিমুক্ত স্বচ্ছ প্ৰশাসন উপহার দেওয়ার অঙ্গীকার করা মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল দুৰ্নীতির ক্ষেত্ৰে শূন্য সহনশীলতা নীতি গ্ৰহণ করা হবে বলে বার বার আশ্বাস দেন। বরাক উপত্যকায় কয়লা কেলেঙ্কারির কেন্দ্ৰ করে যে ব্যাপক দুৰ্নীতির খবর বরাক উপত্যকাকে ছাড়িয়ে ব্ৰহ্মপুত্ৰ উপত্যকাতেও তার ঢেউ আছড়ে পড়েছে। মুখ্যমন্ত্ৰীর অঙ্গীকার থমকে গেছে বরাকে। করিমগঞ্জ জেলা প্ৰশাসনের সৰ্বস্তরের দুৰ্নীতি, এমনকি শাসক দলেরে বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুৰ্নীতির অভিযোগ নিমূল করার জন্য মুখ্যমন্ত্ৰী শেষ পৰ্যন্ত সিবিআই তদন্তের নিৰ্দেশ দিয়ে সৎ সাহসের পরিচয় দিলেন। আজ মুখ্যমন্ত্ৰীর ঘনিষ্ট সূত্ৰে জানা গেছে, সিবিআই শুধু কয়লা কেলেঙ্কারির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেনা। কংগ্ৰেস আমলের নানান দুৰ্নীতিও তদন্তের আওতায় পড়বে। গত ১২ তারিখে করিমগঞ্জ জেলার সুতারকান্দি এলাকা থেকে ধৃত কয়লা মাফিয়া আব্দুল আহাদ চৌধুরীর বাড়ি থেকে পাওয়া এক ‘ডায়েরি' পাওয়ার পর প্ৰমাণিত হয়েছে তার প্ৰবঞ্চনা, জালিয়াতি এবং প্ৰতারণার জাল দিশপুর পৰ্যন্ত পৌঁছিয়েছে। কংগ্ৰেস, বিজেপি, এআইইউডিএফ প্ৰভৃতি দল সংগঠন ছাড়াও পরিবহন, রাজস্বসহ সরকারি পদস্থ অফিসার, পুলিশ অফিসার থেকে শুরু করে অধস্তঃন সাৰ্কেল অফিসারকে পৰ্যন্ত নাড়িয়ে দিয়েছে আহাদ চৌধুরীর ‘ডায়েরি'। বরাক উপত্যকার সংবাদ মাধ্যমের একাংশ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধেও অভিযোগের আঙুল উঠেছে। করিমগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার গৌরব উপাধ্যায় আজ এই প্ৰতিবেদকে জানান, আহাদ চৌধুরীর কাছ থেকে পাওয়া বিতৰ্কিত ‘ডায়েরি' তাদের হেফাজতে আছে। তদন্ত শুরু হয়েছে, দোষিদের ছেড়ে দেওয়া হবে না। সিবিআই তদন্ত তাদের এক্তিয়ারে পড়ে না। বিরোধী দলপতি দেবব্ৰত শইকিয়া আজ এই প্ৰতিবেদকের কাছে বিগত বিধানসভার কাৰ্যপরিক্ৰমার তথ্য দিয়ে জনান, গত ১২ ফ্ৰেব্ৰুয়ারী বিধানসভায় তিনি ‘কোল ইণ্ডিয়া লিমিটেডে'র দুৰ্নীতিকে অন্তভূক্ত করে সিবিআই-র তদন্ত দাবি জানিয়েছিলেন। ঐই দিন সংসদীয় পরিক্ৰমা মন্ত্ৰী চন্দ্ৰমোহন পাটোয়ারী ঘোষণা করেছিলেন, কয়লা সিণ্ডিকেটের অভিযোগ নিয়ে সিআইডি তদন্তের নিৰ্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাটোয়ারী জানিয়েছিলেন, রাজ্যে দুৰ্নীতিরে সঙ্গে যোগসাজসে ১৮৪জনকে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। জবাবে খুশি না হয়ে বিরোধী দলপতি দেবব্ৰত শইকিয়া বলেছিলেন, সিআইডি তদন্তে প্ৰকৃত অপরাধীরা ধরা পড়বে না। আজ পুনরায় বরাক উপত্যকায় সুতারকান্দি আন্তৰ্জাতিক সীমান্ত ব্যাপক কয়লা পাচার ছাড়াও নাগাল্যাণ্ড, মেঘালয় এবং মাৰ্ঘারিটার কয়লা পাচার চক্ৰকেও সিবিআই তদন্তের অধীনে আনার দাবি জানান। তিনি অভিযোগ করেন, বরাক উপত্যকার শাসক দলের নেতারা কয়লা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছে। তারা আগামী বিধানসভায় তা জোরালোভাবে উত্থাপন করা হবে। কংগ্ৰেস দলের প্ৰাক্তন মন্ত্ৰীরা নানা দুৰ্নীতিতে জড়িয়ে ছিল। এক প্ৰাক্তন মন্ত্ৰীর পাথর কোয়ারির ব্যবসা এখনও চলছে বলে অভিযোগের জবাবে বিরোধী দলপতি বলেন, তাদের দলের অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও তাদের কোনও আপত্তি নেই, তবে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্ৰমাণিত হয়, তবে কিন্তু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্ৰহণ করতেই  হবে। উত্তর করিমগঞ্জের কংগ্ৰেস বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ আজ সাংবাদিক সন্মেলনে অভিযোগ করেন, কয়লা কুখ্যাত মাফিয়া আব্দুল আহাদ চৌধুরীর সঙ্গে বিজেপি নেতাদের ভালো সম্পৰ্ক। যত দিন বিজেপি নেতাদের মোটা অঙ্কের মাসোহারা দিয়েছে ততদিন আহাদ ভালো ছিল। টাকা দেওয়া বন্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্ৰেফতার করা হয়। বাৰ্মিজ সুপারি চোরা পাচারে বিজেপির নেতাদের কাছের মানুষ ‘দীপঙ্কর এবং জাকির'কে কেন গ্ৰেফতার করা হচ্ছে না? বিধায়ক অভিযোগ করেন, বিজেপি সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে আব্দুল আহাদ চৌধুরীর দাপট বহুগুণে বেড়ে গেছে। কয়লা কেলেঙ্কারির সঙ্গে যদি তাদের কোনও নেতা জড়িয়ে থাকে তবে তাদেরকেও গ্ৰেফতার করার দাবি জানান বিধায়ক পুরকায়স্থ। মুখ্যমন্ত্ৰীর সিবিআই তদন্তের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে সন্দেহ প্ৰকাশ করেন, সতি্য করেই সিবিআই তদন্ত হবে তো, অপরাধীরা ধরা পড়বে তো? গত ১৫ বছরের কংগ্ৰেস রাজত্বে এবং বিজেপির দুবছরের রাজত্বে সুতারকান্দি আন্তৰ্জাতিক সীমান্ত দিয়ে মেঘালয়ের ভূয়ো চালান দেখিয়ে জিএসটি ফাঁকি দিয়ে ওভার লোডের হাজার হাজার ট্ৰাক প্ৰতিদিন বাংলাদেশে পাচার হয়েছে। সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। গত এপ্ৰিল মাসে কালাইন থেকে সিআইডি প্তজনকে গ্ৰেফতার করার পরেও বাংলাদেশে কয়লা চোরা পাচার কমেনি। সিআইডি তদন্তকারিরা দুৰ্নীতিতে জড়িয়ে পরেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল এবং কয়লা পাচার বিজেপি রাজত্বে বহুগুণ বেড়ে গেছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করেছে। এক উচ্চ পদস্থ পুলিশ অফিসার জানালেন, আব্দুল আহাদ চৌধুরীর কাছ থেকে পাওয়া ডায়েরিতে বিভিন্ন অফিসার ও রাজনীতিবিদকে লক্ষ লক্ষ টাকা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তা আইনগতভাবে প্ৰামাণ্য নথি হিসাবে গণ্য করা হবে না। তবে টাকা পাওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে অনেক তথ্য প্ৰকাশ্যে আসবে। তাই ঐই বিতৰ্কিত ডায়েরী মূল্যবান সূত্ৰ হিসাবে তদন্তকারি অফিসারদের কাছে লাগবে।মুখ্যমন্ত্ৰী সৰ্বানন্দ সনোয়াল এই মাসেই পুনরায় বরাক উপত্যকা সফর করবেন, বলে সেখানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্ৰী দুৰ্নীতির বিরুদ্ধে কড়া বাৰ্ত্তা দিয়ে আসবেন।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.