Header Ads

পূৰ্ব বঙ্গ থেকে আসা মানুষগুলি অসমীয়া ভাষা ছেড়ে বাংলা গ্ৰহণ করছেঃ রাজেন গোঁহাই

 গুয়াহাটিঃ ২০১১ সালের জনগণনায় ভাষাভিত্তিক গণনার বিষয়টি রাজনৈতিক কারণে হয়তো গোপন রাখা হয়েছিল। জাতীয় নাগরিকপঞ্জীর (এন আর সি) চূড়ান্ত প্ৰকাশের প্ৰাক্ কালে ২০১১ সালের জনগণনার ভাষাভিত্তিক পরিসংখ্যা প্ৰকাশ করা হলো। রাজ্যের জাতীয়তাবাদী মহলের আশঙ্খা অসমীয়ারা নিজ দেশে পরভূমিতে পরিণত হবে, অসমীয়াদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। সেই আশঙ্খায় সত্য বলে ধরে নিয়েছে একাংশ মহল। ভাষাভিত্তিক সংখ্যায় দেখা যাচ্ছে, অসমীয়া জনগোষ্ঠীর মানুষ আপাত সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও বাংলাভাষী এবং হিন্দীভাষী মানুষের সংখ্যা ক্ৰমশ বেড়েই চলেছে। রাজ্যের 3কোটি ১২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৫১৬জনের মধ্যে অসমীয়া ভাষীর সংখ্যা ১ কোটি ৫০ লক্ষ ৯৫ হাজার ৭৯৭জন এবং বাংলাভাষীর সংখ্যা ৯০ লক্ষ ২৪ হাজার ৩২৪জন। পক্ষান্তরে বোড়ো, রাভা এবং সাঁওতাল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা হ্ৰাস পেয়েছে। ২০০১ সালে অসমীয়া ভাষীর সংখ্যা ছিল ৪৮.৮০ শতাংশ, তা হ্ৰাস পেয়ে ২০১১ সালে দাঁড়িয়েছে ৪৮.৩৮ শতাংশ অপরদিকে ২০০১ সালের বাংলাভাষীর সংখ্যা ছিল ২৭.৫৪ শতাংশ, তা বৃদ্ধি পেয়ে ২০১১ সালে দাঁড়িয়েছে ২৮.৯১ শতাংশ। নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে প্ৰতিবাদ আন্দোলন চলছে। আসুর নেতৃত্বে আজ গুয়াহাটিতে ২৮টি সংগঠন বিলের বিরুদ্ধে রণ হুঙ্কার দিল। আসুর উপদেষ্টা ভাষাভিত্তিক জনগণনার কথা উল্লেখ করে বলেন, খিলঞ্জীয়া অসমীয়ারা নিজেদের রাজ্যে অস্তিত্ব বিপন্ন হবে তা প্ৰমাণ হয়ে গেল। আমরা কোনও ভাবে দ্বিতীয় শ্ৰেণীর নাগরিক মেনে নেব না। আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অৰ্থমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা বলেন, রাজ্যে যে অঞ্চলে অবৈধ অনুপ্ৰবেশকারীদের রমরমা সেই সব অঞ্চলের বাংলাভাষীদের সংখ্যা দ্ৰুত বেড়ে চলেছে। তিনি বাঘবর, জনিয়ার মতো ধৰ্মীয় সংখ্যালঘু অঞ্চলের কথা উল্লেখ করেন। রেলওয়ে প্ৰতিমন্ত্ৰী রাজেন গোঁহাই বলেন, পূৰ্ব বঙ্গ থেকে আসা লোকগুলি নিজেদের রাজনৈতিক নিরাপত্তার স্বাৰ্থে অসমীয়া ভাষাকে গ্ৰহণ করে জনগণনায় লিখিয়েছিল মাতৃভাষা অসমীয়া। পরে এই লোকগুলির জনসংখ্যা দ্ৰুত বৃদ্ধি হতে শুরু করে, তখন আগের স্থিতি পাল্টিয়ে নিজেদের মাতৃভাষা বাংলাকে গ্ৰহণ করতে শুরু করে। মন্ত্ৰী প্ৰমিলা রাণী ব্ৰহ্ম বলেন, একাংশ জনসংখ্যা নিয়ন্ত্ৰণ মানে না বলে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অন্য এক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্ৰুত হ্ৰাস পাচ্ছে। রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের প্ৰশ্ন রাজ্যে বাঙালি হিন্দুর সংখ্যা ৪৫/৫০ লক্ষর বেশি হবে না। কিন্তু ভাষাভিত্তিক গণনায় দেখা গেল বাংলাভাষীর সংখ্যা ৯০ লক্ষ ছাড়িয়ে গেছে। তাই ধরে নেওয়া হেচ্ছ রাজ্যের বাংলাভাষী মুসলিমরা আগে নিজেদের মাতৃভাষা অসমীয়া হিসাবে লিপিবদ্ধ করেছিল, পরে বাংলাভাষী হিসাবে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরে। চলিত জাতীয় নাগরিকপঞ্জী নবায়নের সময় বাংলাভাষী মুসলিমদের অধিকাংশ নিজেদের মাতৃভাষা অসমীয়া হিসাবেই লিপিবদ্ধ করেছে বলে এন আর সির বিভিন্ন সূত্ৰে প্ৰকাশ। তাই পরবৰ্তী জনগণনার সময় বাংলাভাষীর সংখ্যা ৯০ লক্ষ থেকেও হ্ৰাস পাবে বলে ধরে নেওয়া হেচ্ছ। এই ভাষাভিত্তিক গণনায় রাজ্যের জনবিন্যাসের মধ্যে নানা সমীকরণ উঠে আসছে। বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষ করে অসমীয়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে এক ভয় ও আতঙ্কের মিশ্ৰ প্ৰতিক্ৰিয়ার সৃষ্টি হেচ্ছ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.