Header Ads

অসমে 'এন আর সি' আতঙ্কে শংকিত বাঙালিদের পাশে থাকার প্রতিশ্রূতি বঙ্গ তৃণমূল নেতৃত্বের


দেবকিশোর চক্রবর্তী
কলকাতা : বরাক ও ব্রহ্মপুত্র, অসমের দুই উপত্যকার বাঙালির একটা বড় অংশ ঘোর সংকটের মুখে। নাগরিকত্বের প্রশ্নে জেরবার উভয় উপত্যকার বাঙালি। কারন, তাঁদের অস্তিত্বই আজ কঠিন এক প্রশ্নের সামনে এসে দাঁড়িছে। দুই উপত্যকার বাঙালিদের জন্য সম্প্রতি চরম সময়সীমা নির্দিস্ট করে দিয়েছে অসম সরকার। আগামী ত্রিশ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ের চূরান্ত তালিকা প্রকাশ করবে বিজেপি শাসিত অসম সরকার। ওই তালিকাতেই যে ঝুলে রয়েছে অসমের বাঙালির একটা বৃহৎ অংশের ভাগ্য। ওই তালিকাতেই যে রয়েছে অসমের বাঙালিদের নাগরিক স্বীকৃতির খতিয়ান। বছরের পর বছর ধরে এই অসমে বসবাস করে আসছেন হিন্দু ও মুসলমান ধর্মাবলম্বী বাঙালিরা। মনে প্রাণে যাঁরা অসমকেই নিজেদের মাতৃভূমি হিসেবে মেনে এসেছেন। আজ তাঁরাই কঠিন প্রশ্নের সামনে। আজ তাঁদের ঘিরেই ক্রমশ জটিল হচ্ছে সোনার অসমের সরল রাজনীতির বাতাবরন। চলতি মাসের শেষ দিনটির দিকে তাকিয়ে অসমের সংখ্যালঘু বাঙালি সমাজ। নাগরিকত্ব প্রমাণের স্বপক্ষে তথ্য দাখিলের শেষ তারিখটি আসলে চলতি মাসের শেষ দিনটিই। ওই সময়সীমার মধ্যে তথ্য প্রমাণ পেশ করতে না পারলেই হতে হবে বাস্তুচ্যুত। ঠাঁই হবে 'মানব খোয়ারে'। পরিভাষায় যাকে বলা হয় 'ডিটেনসন ক্যাম্প'। সে এক কঠিন জীবন। আলো থেকে টেনে হিচড়ে ঠেলে দেওয়া অপমানের আঁধার জীবনে। অসমে বছরের পর বছর ধরে বসবাস করার পরেও আজ কঠিন এক প্রশ্নের সামনে ত্রস্ত বাঙালি সমাজের একটা বড় অংশ। বিশেষ করে নামনি অসমের বাঙালিদের পরিস্থিতি রীতিমতো মতো উদ্বেগের। যাঁদের অধিকংশই মুসলিম সম্প্রদায়ের। তাঁদের হয়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের কাছে দরবার করতে গিয়েছিলেন এআইইউডিএফ দলের সুপ্রিমো বদরুদ্দিন আজমল সহ রাজ্যের বেশ কয়েকজন নেতা। সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী সনোয়াল অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে সেই প্রতিশ্রুতিতে অবশ্য ভরসা পাচ্ছেন না অসমের আতঙ্কিত বাঙালি সমাজ। তবে সুখের কথা, এই বিপন্য বাঙালিদের আসন্ন বিপদে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি অবশ্য আগাম দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আগেভাগেই বলে রেখেছেন, অসমে বাঙালিদের ওপর অকারন জুলুম ও অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না। আজ মঙ্গলবার তৃণমূল ভবনে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গেলে হাতে শুরুতে কেউ মুখ খুলতে চান নি। তবে এই নীরবতার বিষয়টিও সংশ্লিস্ট নেতারা কবুল করছেন, 'দলের সুপ্রিমো এ ব্যাপারে যা বলবার বলবেন। বিষয়টা যেহেতু প্রাদেশিক। অর্থাৎ প্রতিবেশি রাজ্যের, তাই এব্যাপারে যা বলার তা তিনিই বলবেন। তবে এই ইস্যুটিতে বাংলার মানুষ কিন্তু অসমের বাঙালির পাশেই থাকবেন।' রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের যুব সম্পাদকের কথায় সহমত প্রকাশ করলেন দলের এক প্রবীণ নেতা। যিনি রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীতেও আছেন। তবে চলতি মাসেই এ রাজ্য থেকে ফের দলের এক প্রতিনিধি দল অসম সফরে যাচ্ছেন বলে ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও এ রাজ্যের বিরোধিদের একাংশ বিষয়টাকে লঘু করার জন্য বলছেন, 'দিদির সামনের লক্ষ্য আগামী লোকসভা ভোট। উনি রাজনীতি করার জন্যই অসমকে টার্গেট করছেন।' তবে জোড়া ফুল শিবিরের নেতারা বলছেন, মানবিক কারনেই দল অসমের বাঙালির পাশে দাঁড়াবে। এছাড়া আর কোনো উদ্দেশ্য নেই।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.